![]() |
পরী,পর্ব ১,ভূতুরে গপ্পো |
------- #পরী -------
Part-1
.
ফায়াজ কলেজের সবচেয়ে ব্রিলিয়ান্ট ছাএ, দেখতেও হিরোদের মত। কলেজের সব বন্ধুরা ফায়াজকে অনেক পছন্দ করতো। ভদ্রতার দিক দিয়ে ফায়াজ কলেজের সবার উর্ধে। ফায়াজের বেষ্ট ফ্রেন্ড হলো আবির। ছাএ হিসেবে আবির ফায়াজের মতো ব্রিলিয়ান্ট না হলেও বুদ্ধিতে অনেক এগিয়ে। ফায়াজ আর আবির একই ফ্লাট এ থাকে, মেস্ এর মতো না কারন মেস্ এ তো এক রুম এ দুই জন তিন জন ও থাকে ওরা দুই জন আলাদা আলাদা রুম এ থাকে। বাসায় টিভি ফ্রিজ থেকে শুরু করে সব ফার্ণিচারই আছে। আবির অবশ্য কিছু দিন কলেজের হলে ছিলো, হোস্টেলের খাবার কতটা আপডেট সেইটা তো আপনারা কম বেশি সবাই জানেন।আবির দু মাস ও হোস্টেলে টিকে নি। হোস্টেল ছেড়ে ফায়াজের বাসায় উঠেছে। কাজের বুয়া প্রতিদিন ঘর গোছানো থেকে শুরু করে কাপড় কাচা রান্না-বান্না সহ সব কাজ করে দিয়ে যায়। ফায়াজ আরর আবির উচ্চ মধ্যবিও পরিবারের ছেলে।ফায়াজের বাবা ব্যবসায়ী আর মা সরকারি চাকুরী করেন। ফায়াজ মা-বাবার অনেক আদরের একমাএ সন্তান। আর আবিরে বাবা রিটায়ার্ড সরকারী কর্মকর্তা মা গৃহিণী। আবিরা দুই ভাই এক বোন। আবিরের বড় ভাই ব্যাবসা করেন। বিয়ে করেছেন দুই বছরের একটা মেয়ে ও আছে। আবিরের ছোট বোন ক্লাস টেন এ পড়ে। সারাদিন বন্ধুদের সাথে ঘুরো ঘুরি আড্ডা দিতে ওরা দুজনই বেশ উপভোগ করতো বিশেষ করে রাতে বাইক রাইড করা। ফায়াজের সাথে বাইকের অন্যরকম টান আছে। প্রায় রাতেই আবিরকে নিয়ে ফায়াজ বাইক রাইডএ বের হয়। ওদের একটা বাইক রেচিং টিম ও আছে ফায়াজের কাজিন মিশুও ওদের সাথে মাঝে মাঝে রাইড করে।
,
,
আবির অফ পিরিউড এ কেম্পাসের বারান্দায় দাড়িয়ে একটা বই পড়তেছিলো, দোতালায় উঠে আবিরকে বারান্দার সামনে দেখে বিদ্যুৎ গতিতে মিম আবিরের কাছে আসলো।মিম আবিরের গার্ল ফ্রেন্ড। আবির দেখেও না দেখার ভান করে বইয়ের দিকে মনোযোগ দিলে। মিম এমন ভাবে আবিরের দিকে তাকিয়ে আছে যে এক্ষুনি ওরে খুন করে ফেলবে।
বইএর পাতা উলটাতে উলটাতে আবির বল্লো কিছু বলবা?
চোখে-মুখে অনেক রাগ নিয়ে ভারি গলায় মিম বল্লো হুম।
আবির মিম এর দিকে তাকিয়ে বল্লো কি?
-তুমি ইমাকে কি বলছো?
=কই কিছু বলি নাই।
-একদম মিথ্যা বলবা নাহ,তুমি ওরে বলো নাই আমি তোমারে জালাই একটু পর পর ফোন দেই সিগারেট খাওয়ার জন্য নিষেধ করি রাতের বেলা বাহিরে ঘুরো ঘুরি করতে মানা করি আস্তে বাইক চালাইতে বলি? এই সব কেনো বলি তোমার খারাপের জন্য? নাকি তোমার ভালোর জন্য? কি হলো চুপ করে আছো কেনো? ভালোবাসি তাই জালাই আরো জালাবো কিন্তু দুনিয়াতে এতো মানুষ থাকতে ঔ কুটনি টারে কেনো বলতে গেছো যার পেটে কোন কথাই থাকে না।
= ওরে কুটনি বলবা না। ও অনেক ভালো অনেক লক্ষি একটা মেয়ে। ভুলো যেও না ওর মাধ্যমেই আমাদের সম্পর্কের শুরু হয়েছে।
-হে হবেই তো ভালো বাংলাদেশের সব মেয়েরাই ভালো খুব লক্ষি শুধু আমি ছাড়া।কারন আমি তোমাকে অন্য মেয়েদের বয় ফ্রেন্ড দের মতো ছাড় দেইনা তাই আমি খারাপ।
=হইছে ঘেন ঘেন কইরো না বুচ্ছি।
-কি আমি ঘেন ঘেন করি?
=না তুমি ঘেন ঘেন করবা কিভাবে তুমিতো কথাই বলতে পারো না বোবা।
-আবির ফাজলামো কইরো না আমি অনেক সিরিয়াস তোমার এই বদ অভ্যেস গুলো ত্যাগ করো। তোমার ভালোর জন্যই তোমাকে বলি। আমি চাইনা তোমার অসচেতনতার কারনে তোমার বড় কোন ক্ষতি হওক। হাঁসতেছো কেন?
=হাঁসি আসলে কি কাঁদবো নাকি?
-সব সময় ফাজলামি ভালো লাগে না তোমার সাথে আমি আর কোন কথাই বলবো না।
রাগ দেখিয়ে চলে গেলো মিম।
ওর রাগ করার রাইট আছে কেউই চাইবে না তার ভালোবাসার মানুষটার কোন ক্ষতি হোওক।
মিম কে নিয়ে ভাবতে ভাবতে বেজে উঠলো ফোন।
পকেট থেকে ফোন বের করে দেখি ফায়াজ কল করছে। কল ধরলো আবির।
-হেলো আবির কলেজ থেকে ফেরার সময় রেস্টুরেন্ট থেকে খাবার কিনে আনিস বুয়া আজকে আসে নি।
=আচ্ছা ঠিক আছে, জ্বর কমছে তোর? এখন কেমন লাগছে?
-মোটা মুটি ভালো
=জ্বর কমছে?
-হে কমেছে বাট মাথা ব্যাথা করছে অনেক।
=আচ্ছা তুই রেষ্ট নে আমি আর ২টা ক্লাস করে আসছি।
চার দিন যাবৎ ফায়াজের জ্বর সখ করে বৃষ্টিতে ভিজে জ্বর বাধিয়েছে। কিছু দিন আগে বাইক এক্সিডেন্ট করে পা ভেঙ্গেছিল এইসব ভাবতে ভাবতে ক্লাসে ঢুকলো আবির। ক্লাস শেষ করে খাবার নিয়ে বাসায় এসে দেখে ফায়াজ ঘুমাচ্ছে। ফায়াজ যখন ঘুমায় ওরে ছোট্ট বাচ্চাদের মতো লাগে।
.
চলবে...........