![]() |
পরী পর্বঃ ৩,ভূতুরে গপ্পো |
------ #পরী ------
Part-3
.
আমি আর আবির খাবার খেয়ে ছাদে উঠলাম। আবির সিগারেট ধরালো ওদের ছাদটা অনেক বড় ছাদে কিছু ফুলের গাছ আর একটা দোলনা ও আছে। বাড়ির পেছনে বড় একটা পুকুর। আবির তোদের পুকুরে মাছ আছে?
-হুম আছে ইনফেক্ট তুই এই পুকুরের মাছ দিয়ে লাঞ্চ করেছিস।
=কাল এই পুকুরে গোসল করবো মাছ ধরবো।
-আচ্ছা ধরিস। তুই কি ছাদে থাকবি?
=হে কেনো তুই কি চলে যাবি।
-হুম। আমি রুম এ যাচ্ছি তুই চারপাশ টা দেখ।
আবির ছাদ থেকে নেমে গেলো।
আবির দের বাসার চারপাশ বাউন্ডারি করা। নিচে একপাশে একটা দোলনা আছে অন্যপাশে ফুলের বাগান। চার পাশে হাতে গুনা কয়েকটা বাড়ি। কিছুক্ষন পর রুমে আসলাম কেমেরা নেয়ার জন্য আবির ঘুমাচ্ছে , ভাবছিলাম ওরে নিয়ে গ্রামটা ঘুরে দেখবো কিন্তু ও ঘুমাচ্ছে তাই আর ডাকলাম না নিচে নেমে এসে দেখি সবাই বিয়ের কাজ নিয়ে ব্যাস্ত। আন্টি ছোট চাচির সাথে বসে কাজ করছিলেন আমি গিয়ে আন্টিকে বল্লাম আমি গ্রামটা ঘুরে দেখবো আন্টি বল্লো আবিরকে নিয়ে যাও।
-আবির তো ঘুমাচ্ছে।
=আচ্ছা আমি রিয়া কে ডেকে দিচ্ছি তুমি ওর সাথে যাও।
ছেট চাচি বল্লো ফায়াজ এখানে কেমন লাগছে?
জ্বি আন্টি ভালো লাগছে।
তমার সাথে তো তোমার পরিচয় হয় নি তুমি যখন আসছিলা ও তখন আমার বড় বোনের বাসায় গিয়েছিলো।
তমা এই তমা এদিকে আয় তো, তোর ফায়াজ ভাইয়া কে দেখে যা।
তমা আসলো হায় ভাইয়া ভালো আছেন?
-এইতো আপু ভালো তুমি কেমন আছো।
একটা হাঁসি দিয়ে বল্লো ভালো আছি।
আবির ভাইয়া বাসায় আসলে সব সময় আপনার কথা বলে, আপনাকে দেখার ও অনেক ইচ্ছে ছিলো।
এমন সময় রিয়া আসলো আন্টির সাথে।
রিয়া বল্লো ভাইয়া চলেন।
-আচ্ছা আমি ঘুরে আসি পরে কথা বলবো।
ছোট চাচি বল্লো আচ্ছা যাও।
এর পর আন্টি বল্লো সন্ধার আগে চলে এসো।
-আচ্ছা আন্টি।
বাসা থেকে বের হয়ে আমি আর রিয়া হাটতে লাগলাম। রিয়া তোমার পড়াশেনা কেমন চলছে?
-জ্বি ভাইয়া ভালো।
আচ্ছা রিয়া আবির বলেছিলো তোমাদের এই খানে নাকি ভূত আছে কথা টা কি সত্যি নাকি?
-হে ভাইয়া আমাদের এখানে রাত ১০টার পর কেউ বাহিরে থাকে না। সবাই বলে রাতে নাকি ভূতেরা বের হয়।
=তুমি কখনো দেখছো?
-হে ভাইয়া আমি একদিন রাতের বেলা বাবার উপর রাগ করে ছাদে গিয়ে দোলনাতে বসে বসে কাঁদছিলাম কিছুক্ষণ কান্না করার পর টের পাই আমি একা কাঁদছি না আমার সাথে আরেক জন কাঁদছে।
আমি চুপ করে কান্নার শব্দটা শুনতে থাকি। অদ্ভুত একটা চাপা কান্নার শব্দ আসছে বাসার পিছনের পুকুরের পাশটা থেকে। আমি আস্তে আস্তে এগিয়ে গিয়ে দেখি পুকুরের শেষ প্রান্তের ঘাটলা টা তে বসে একটা মেয়ে কাঁদতেছে। চাঁদের আলোতে শুধু ওর শরীর আর চুল গুলো দেখা যাচ্ছে কিছুক্ষণ পর মেয়েটা কান্না থামিয়ে দিলো এর পর আমার দিকে তাকালো, ও দেখতে এতো বাজে আর ভয়ংকর ছিলো যে আমি মেয়েটাকে দেখে একটা চিৎকার দিয়ে অজ্ঞান হয়ে যাই।
=তার পর কি হলো?
পর দিন আমার জ্ঞান ফিরে আমার শরীরে অনেক জ্বর আসছিলো ডাক্তার অনেক ওষুধ দিয়েছিলো কিন্তু জ্বর ভালো হয় নি পরে এক হুজুর আমাকে একটা তাবিজ দেয়, তাবিজটা পরার পর আস্তে আস্তে আমার জ্বর ভালো হয়।
ভাইয়া আপনি কখনো ভূত দেখেছেন?
-আমি এইসব এ বিশ্বাস করিনা, কখনো দেখিনি তো তাই।
হাটতে হাটতে আমরা অনেক দূরে একটা পুরনো ভাঙ্গা বাড়ির সামনে চলে আসি। বাহিরের বাউন্ডারি গুলো খসে পড়েছে বাড়ির ভিতরে অনেক জংগল। বাড়িটার কয়েকটা ছবি তুল্লাম। রিয়া এই বাড়িটা কার ছিলো?
=ভাইয়া শুনেছি এই বাড়িটা এক বিদেশী ওয়ালার ছিলো। ওনার একটা ছেলে ছিলো নাম ছিলো সোহান। ছেলেটি পাশের গ্রাম এর একটা মেয়েকে ভালোবাসতো। বেপারটা জানাজানি হবার পর ছেলেটার বাবা ছেলেটাকে বিদেশে পাঠিয়ে দেয় এর পর একদিন মেয়েটা কাউকে কিছু না বলে কোথায় যেনো চলে যায় তার কিছু দিন পর এ বাড়ির বাড়ির সবাই মারা যায়। শুধু ছেলেটা ছাড়া। এর পর নাকি অনেকেই এই বাড়িটা দখল করতে এসেছিলো পরে তাদের লাশ পাওয়া যায় বাড়ির পেছনের জংগল এ।
-কি বলো তুমি এই সব।
=জ্বি ভাইয়া আমি সত্যি বলছি।
-পরে কি হলো?
পরে এক তান্ত্রিক এসে বাড়িটা দেখে বলে এই বাড়িটা অভিশপ্ত বাড়ি এখানে কেউ থাকতে পারবে না।এরপর তান্ত্রিক মন্ত্র পরে বাড়িটা বন্ধ করে দেয়। এখনো এই বাড়িতে ভূতেরা ঘুরে বেড়ায়।
আকাশে বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে, সন্ধা ও হয়ে আসছে আমি রিয়া কে বল্লাম ভাইয়া চলো বাসায় চলে যাই আকাশের অবস্থা ভালো নাহ বৃষ্টি আসতে পারে।
রিয়া বল্লো ওকে ভাইয়া চলেন।
বাসায় ফিরতে ফিরতে আমি এই গ্রাম সম্পর্কে আরো অনেক কিছুই জানলাম রিয়ার কাছ থেকে। বাসায় এসে দেখি আবিরদের অনেক আত্মিয় এসেছে। আন্টি আমাকে দেখে বলে উপরে গিয়ে ফ্রেশ হও আমি নাশতা পাঠিয়ে দিচ্ছি। রুমএ এসে দেখি আবির একটা মেয়ের সাথে কথা বলছে, আমাকে দেখে আবির বল্লো কোথায় গিয়েছিলি?
কেমেরা টা রাখতে রাখতে বল্লাম রিয়াকে নিয়ে গ্রামটা ঘুরে দেখছিলাম।
=ভালো করেছিস। পরিচয় করিয়ে দেই ও হচ্ছে আমার খালাতো বোন তৃশা।
-একটা হাঁসি দিয়ে বল্লো হাই কেমন আছেন
=জ্বি ভালো আছি, আপনি কেমন আছেন?
-জ্বি ভালো।
=আবির তোয়ালে টা দে তো। তোয়ালেটা নিয়ে বল্লাম এক্সকিউমি আপনারা কথা বলুন আমি ফ্রেশ হবো।
,
তোর বন্ধু অনেক ভাব ওয়ালা বুঝছি। গার্ল ফেন্ড আছে ওর?
-না নাই। কেন এই কথা জিগাইলি কেন?
=চান্দু তোমার ভাব আমি ছুটামু, মনে মনে বল্লো তৃশা।
-কিরে কি ভাবিস?
=হুম, না কিছু না তুই থাক আমি নিচে যাবো সবাইরে একটু জ্বালাই আসি।
বাহিরে খুব বৃষ্টি হচ্ছে। হালকা হালকা ঠান্ডা ও পরেছে বাড়ির ছেলেরা সবাই মিলে একসাথে ডিনার শেষ করে রুম এ এসে শুয়ে পড়লাম।
জার্নি করে এসেছি তার পর বিকেলে ঘুরো ঘুরি সব মিলিয়ে খুব ক্লান্ত। শোয়ার সাথে সাথেই ঘুম চলে আসলো।