For more update Contact Us Subscribe!

সুমন -পর্ব ২ | ভূতুরে গপ্পো

গল্পঃ সুমন পর্ব_২ লেখকঃ আকাশ মাহামুদ সুমন নামে আমার একটা বন্ধু ছিল যে আত্মহত্যা করে মারা গিয়েছিল । নিচের ঘটনাগুলো তার মৃত্যুর পরে ঘটে । (এক ❤) একবার
Please wait 0 seconds...
Scroll Down and click on Go to Link for destination
Congrats! Link is Generated
সুমন -পর্ব ১২, ভূতুরে গপ্পো
সুমন -পর্ব ২, ভূতুরে গপ্পো



 গল্পঃ সুমন 

পর্ব_২

লেখকঃ আকাশ মাহামুদ

সুমন নামে আমার একটা বন্ধু ছিল যে আত্মহত্যা করে মারা গিয়েছিল । নিচের ঘটনাগুলো তার মৃত্যুর পরে ঘটে ।

(এক ❤)

একবার এক বন্ধুর বাড়িতে গিয়ে ফিরতে ফিরতে অনেক রাত হয়ে গেলো আমার । রাত এগারোটার দিকে বন্ধুর বাড়ি থেকে বের হয়ে বাইকে উঠলাম । বাইকে করে যখন রহিমপুর গোরস্থানের কাছে এলাম তখন হঠাৎ বাইক বন্ধ হয়ে গেলো। রাস্তার পাশে বাইক সাইড করে বসে বসে দেখছি আর ভাবছি হলো কি । তেল আছে সব ঠিক আছে কিন্তু বাইক স্ট্যাড নেয় না । কিকের পর কিক মারছি আর নেমে নেমে দেখছি সমস্যা কি । মেজাজ খারাপ । সিগারেট ধরিয়ে টানছি আর দেখছি । যখন বাইকের মটর বসে দেখছি তখন বাইকের ওপারে এসে সুমন দাঁড়িয়ে বললো,

কিরে বাইকে কি হয়ছে ?

আমি একবার ওর দিকে তাকিয়ে স্বাভাবিক ভাবে বললাম, আর বলিস না দোস্ত, কি যে হলো বুঝতে পারছি না । স্ট্যাড নিচ্ছে না । তুই এখানে কি করিস ?

সুমন বললো একটু ঘুরতে বের হয়েছি । একা একা ভালো লাগছিল না ।

আমি দাঁড়িয়ে হাতে লেগে যাওয়া প্লাগের কালি কাপড়ে মুছতে মুছতে বললাম, দেখি এইবার স্ট্যাড নেয় কি না । এই বলে কিক মারতেই বাইক স্ট্যাড নিলো । আমি বললাম,

থাক গেলাম ।

এই বলে বাইকে একটা টান দিলাম । বেশ কিছু দূর আসার পরে আমার মনে হলো আমি এই মাত্র কার সঙ্গে কথা বললাম আমি ? 

সুমনের সঙ্গে? 

এ কি করে সম্ভব? সুমন তো আজ থেকে প্রায় দশ বছর আগে গলায় দঁড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। তবে আমি কার সঙ্গে কথা বললাম?

বাইকের উপরেই যেন আমি জমে গেলাম । গ্রামের ভাঙাচোরা রাস্তায় বাইক ৮০ এর উপরে চলছে তবু মনে হচ্ছে বাড়ি অনেক দূর । বাড়িতে এসেও আমি নিজেকে বিশ্বাস করাতে পারছিলাম না যে আমি ভুল দেখেছি। কারণ আমার স্পষ্ট মনে আছে আমি সুমনের সঙ্গেই কথা বলেছি ।

কেন এমন হয়েছিল তা আমি আজো জানি না তবে আমি সুমন কে ভুল দেখি নাই । হয়তো ভালোবাসি বলেই সেদিন হয়তো ওর আত্মাকে দেখেছিলাম । দোয়া করি সুমন যেখানেই থাকুক ভালো থাকুক ।

(দুই 💕)

এলাকার টানা ৮ বার নির্বাচিত মেম্বার (নাম বলতে চাইছি না) তিনি অসুস্থ থেকে থেকে মারা গেলেন । কয়েকদিন আগে অসুস্থতা সম্পর্কে জানতে পারলাম তার বাড়ির কাজের মানুষের কাছে ।

সুমন যখন মারা গিয়েছিল তখন মেম্বার সাহেব অনেককে সুমনের জানাযায় যেতে নিষেধ করেছিলেন । সুমনকে দাফন করার কিছুদিন পরেই তিনি অসুস্থ হয়ে পরেন । মেম্বার সাহেব সবাই অসুস্থতার কারণ যেভাবে  বলেছেন আমি সেই ভাবেই লিখছি ।

আমি সেদিন রাত দশটার দিকে খাবার খেয়ে বারান্দায় গেলাম একবার । খাবার খেয়ে না হাঁটলে শরীর ভাল লাগে না । বাড়িতে আরো তিন চারজন আছে যে যার ঘরে । আমি বারান্দায় হাঁটার সময় হঠাৎ দেখলাম ওঠানের কোনায় কেউ একজন দাঁড়িয়ে । বাড়ির গেট লাগানো। সবার ঘরের দরজা বন্ধ তবে কে দাঁড়িয়ে ওখানে তা দেখার জন্য আমি বারান্দার লাইট জ্বালালাম । লাইট জ্বেলে দেখলাম পঁচা গলা শরীর নিয়ে একটা বডি উঠোনের কোনায় দাঁড়িয়ে আছে । হঠাৎ সেই বডি বললো, তুই আমার জানাযা পড়াতে নিষেধ করেছিলি কেন ? আমি তোর কি ক্ষতি করেছিলাম । তোকে আমি ছাড়বো না ।

আমি নড়তে পারছিলাম না । বডিটি একটু একটু করে এগিয়ে আসতে আসতে বারান্দার গ্রিলের কাছে চলে এসেছে । আমি নড়তেও পারছি না চিৎকারও দিতে পারছি না । বডি যখন গ্রিলের ভেতর দিয়ে হাত ঢুকিয়ে আমার হাত ধরে, চিৎকার দিয়ে তখন আমি অজ্ঞান হয়ে যায়। এরপরে মেম্বার সাহেবের আর কিছু মনে নাই । 

সারাজীবন যিনি শক্ত শরীরে এলাকার মানুষের সেবা করে এসেছেন। এমন কি মুক্তিযুদ্ধে অস্ত্র হাতে যুদ্ধ করেছেন। সেই মানুষটা ঐ ঘটনার পর আর বিছানা থেকে উঠতে পারলেন না । একদম বিছানায় পরে গেলেন এবং একদিন মরেই গেলেন ।

আরেকটি কথা বলি । যে গোরস্থানে সুমনকে দাফন করা হয়েছিল সেখানে থেকে মেম্বার সাহেবের বাড়ি মাত্র পঞ্চাশ হাত দূরে । বাড়ির গেট থেকেই গোরস্থান এবং বাঁশতলায় সুমনের কবর দেখা যাই ।

(তিন 💤)

সুমন সম্পর্কে খোঁজখবরে আরেকটি ঘটনা সামনে এসেছে । যে গোরস্থানে সুমন কে দাফন করা হয়েছিল সেই গোরস্থানের পাশেই মিনি রাস্তা । রাস্তার পাশেই মসজিদ । এই মসজিদের ঈমাম সাহেব আগে মসজিদেই ঘুমাতেন । তার কাছে থেকে যা জানলাম তা তার ভাষ্যমতেই লিখছি ।

তখন গরমের সময় । ভোর বেলা । ফজরের আজান দেওয়ার টাইম হয়েছে কিন্তু এখনও আজান হয় নাই । প্রতিদিন মোয়াজ্জেম সাহেব এসে আজান দেন । আজকে কেন দেরি করছেন ভেবে আমি বিছানা ছেড়ে উঠলাম । আমি মসজিদের বারান্দায় ( গ্রিল দিয়ে ঘেরা) হাঁটছিলাম আর দাঁতন করছিলাম । হঠাৎ দেখলাম দূর থেকে মোয়াজ্জেম সাহেব দৌড়াতে দৌড়াতে এসে গেটের দরজা ধরে বললেন, হুজুর তাড়াতাড়ি গেট খুলেন । আমি গেট খুলে দিয়ে বললাম, কি হয়েছে? আপনি এমন করছেন কেন ?

মোয়াজ্জেম সাহেব আমাকে আঙুল দিয়ে গোরস্থানের কোনায় কিছু একটা দেখালেন কিন্তু আমি কিছুই দেখছি না । কয়েকবার তিনি বললেন, হুজুর দেখেন ঐ যে, ঐ যে দেখেন ।

আমি বললাম, মোয়াজ্জেম সাহেব ওখানে কিছুই নাই । এই বলে যখন তার ঘাড়ে হাত দিয়ে দূরে তাকালাম আমি দেখলাম একটা বডি যার শরীরের চামড়া মাংস পঁচে ঝুলে আছে। সে দাঁড়িয়ে আছে । চোখ গুলো যেন আগুনের মত লাল হয়ে জ্বলছে । বিশ্বাস করুন আমি স্পষ্ট দেখেছি । রাত, তবে রাস্তার লাইটে চারপাশ সব আলোকিত ছিল ।

আমি দেখলাম বডিটি একটু একটু করে এগিয়ে আসছে । আমি দোয়া দরূদ পড়তে পড়তে মোয়াজ্জেম সাহেব কে নিয়ে মসজিদের ভেতরে চলে গেলাম । দরজা দিয়ে দেখলাম বডিটি একেবারে মসজিদ থেকে একটু দূরে রাস্তার উপরে এসে দাঁড়িয়েছে । আমি দোয়া দরুদ পড়তে থাকলাম তবুও যাচ্ছে না ।

আমি মোয়াজ্জেম সাহেবকে বললাম, আপনি আজান দিন । মোয়াজ্জেম সাহেব কাঁপতে কাঁপতে গিয়ে মাইকে আজান দিলেন আর আমি তার পাশেই দাঁড়িয়ে থাকলাম । আজান শেষ হওয়ার পরে আবার মসজিদের বাইরে রাস্তার তাকালাম । দেখলাম কিছুই নেই । পূর্ব আকাশে একটু একটু করে আলো ফুটছে ।

তারপর থেকে ভাই আমি আর ঐ মসজিদে রাতে থাকি না । মসজিদ থেকে দূরে বাসা ভাড়া নিয়েছি । এখনও ফজরের ওয়াক্তে কয়েকজন মিলে এসে মসজিদে ঢুকি । নিজেই আজান দিই । মোয়াজ্জেম সাহেব সেই ঘটনার পর থেকে আর এই মসজিদের আশেপাশেও আসেন নাই । আমি পরে লোকজনের কাছে এবং বডির ধরণ বলে জেনেছিলাম যে বডিটি আমি দেখেছিলাম সেইটা আপনাদের এলাকার একটা ছেলের বডি। যা অনেকেই দেখেছে । আমি প্রতিদিন এখন ঐ মুর্দার জন্য দোয়া খায়ের করি । আল্লাহ ঐ ব্যক্তির সকল গোনহা মাফ করে দিন ।

#চলবে





About the Author

Tech Blogger.
Cookie Consent
We serve cookies on this site to analyze traffic, remember your preferences, and optimize your experience.
Oops!
It seems there is something wrong with your internet connection. Please connect to the internet and start browsing again.
AdBlock Detected!
We have detected that you are using adblocking plugin in your browser.
The revenue we earn by the advertisements is used to manage this website, we request you to whitelist our website in your adblocking plugin.
Site is Blocked
Sorry! This site is not available in your country.